‘বাবুই’ এর মূল লক্ষ্য জীবনের জন্য অতি প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন দক্ষতাগুলোকে (Lifeskills) কীভাবে শিশু বয়স থেকে গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে কাজ করা। গবেষণা বলছে, জীবন দক্ষতার একটি বড় অংশ অর্জিত হয় শিশুর পাঁচ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই। একটি শিশুর মস্তিষ্কে জন্মের পরের প্রথম এক হাজার দিনেই প্রতি সেকেন্ডে দশ লাখেরও বেশী নিউরন পরস্পর সংযুক্ত হয়। তাই এ সময় শিশু খুব দ্রুত চারপাশ থেকে শিখতে থাকে এবং সহজেই কিছু অভ্যাস রপ্ত করে থাকে। BabuiTip ডিজাইন করা হয়েছে শিশুর নিত্যদিনের খাওয়া, ঘুম বা খেলার সময়ে উপযোগী নানা ধরনের ব্রেইন বিল্ডিং এক্টিভিটি দিয়ে। বাবা-মা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বা যারাই শিশুটিকে পেলে-পুষে বড় করছে (কেয়ার-গিভার) তারা যেন সহজেই এই ব্রেইন বিল্ডিং এক্টিভিটিগুলো শিশুর সঙ্গে চর্চা করতে পারে তেমন করেই BabuiTip সাজানো হয়েছে। প্রতিটি BabuiTip তৈরির পিছনে সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক ভিত্তি, বিস্তর গবেষণা আর বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে। তাই অনেক শিশুপালন কৌশলই আছে যেগুল আমরা আগে থেকেই জানি, কিন্তু এখন সেগুলো থেকে শিশু কী শিখছে তাও জানতে পারবো।
আসুন জেনে নেই কী সেই ৭টি অতি প্রয়োজনীয় জীবন দক্ষতা (Lifeskills):
আসুন জেনে নেই কী সেই ৭টি অতি প্রয়োজনীয় জীবন দক্ষতা (Lifeskills):
আপনার নিজের কথাই চিন্তা করে দেখুন, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারা কতটা জরুরি। আর এই আত্মনিয়ন্ত্রণ শিশু একটু একটু করে শিখে নিজেকে চেনার মধ্য দিয়ে। বিভিন্নভাবে আমরা যখন শিশুকে তার আবেগ এবং উত্তেজনা, কীসে তার খারাপ লাগে বা ভাল লাগে এসব পরিস্থিতি অনুযায়ী বুঝিয়ে দেই, শিশু তখন তার বোধগুলো নিয়ে একটি ধারনা পায়।সে বুঝতে পারে তার আচরণের কার্যকারণ। পরিস্তিতির সঙ্গে যখন আমরা মানসিক অবস্থার পরিবর্তন শিশুকে পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দেই, শিশু তখন এক ধরনের যোগসূত্র খুজে পায়। নিজের কর্মকান্ড আর তার ফলাফল নিয়ে ভাবে।
|
খাওয়া ঘুম আর খেলা, এই দৈনন্দিন রুটিনেই শিশুর বেড়ে উঠা। সহজভাবে বলতে গেলে খেলার মধ্য দিয়েই শিশু সব শিখে। সৃজনশীলতা কিংবা শৃংখলা, নিয়মানুবর্তিতা এবং উদ্ভাবন এইসব শিশু খেলার মাঝেই খুজে পায়। সুর তুলে গেয়ে উঠা বা নতুন কোন আইডিয়া পাওয়া, সবই শিশু খেলতে গিয়েই জানতে পারে। তাই শিশুর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খেলার সুযোগ পাওয়া খুব জরুরি।
|
জীবনে সমস্যা আসবেই। খেলতে খেলতেই একটা শিশুকেও তার বয়স অনুযায়ী বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে হয়। সমস্যার মুখোমুখি হলে শিশুকে এ নিয়ে ভাবতে হয়, নানাভাবে সমাধানের পথ খুঁজতে হয়। তাই খেলার মধ্য দিয়ে আমরা তাকে উৎসাহিত করি সমাধান বের করার। আর সমাধানের এই চেষ্টা করে যাওয়াটাই শিশুর আসল শিক্ষা, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। সমস্যা মোকাবেলায় সমাধানের এই চর্চা শিশুর একটি অভ্যাসে পরিণত হয়, সে সাহসী হয়ে উঠে।
|
নিজের ভাবনাকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করাটা জরুরী। সঠিক শব্দে এবং বাক্যে কথা বলতে পারাটা একটি দক্ষতা যা চর্চায় সমৃদ্ধ হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে কথা বলতে শেখার অনেক আগে থেকেই শিশু সাধারণত নানান অঙ্গভঙ্গিতে আমাদের সঙ্গে তার ভাবের আদান প্রদান করতে থাকে। ইচ্ছানুযায়ী শব্দ প্রকাশ করার জন্য তার মুখের পেশীর দৃঢ়তার দরকার হয়। সেই পেশির দৃঢ়তা একটা নির্দিষ্ট বয়সের আগে তৈরি হয়না। কিন্তু তার শ্রবণ ও দৃষ্টি শক্তির মাধ্যমে শিখন প্রক্রিয়া চলতে থাকে। আর সেগুলোর মাধ্যমেই সে চেষ্টা করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার। আমরা যখন তার চোখে চোখ রেখে কথা বলি তখন সে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হয় আমাদের সঙ্গে কথা বলতে, নতুন নতুন শব্দ শিখতে।
|
আমরা একেকজন একেকরকম। অপরকে বুঝতে বা তার ভাবনার পেছনের কারণ খুজে পেতে ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে দেখা খুবই জরুরি। যখন শিশুর চিন্তায় নমনীয়তা তৈরি হয় তখন সে একটা খোলা মনে ভাবতে পারে। একটা নির্দিষ্ট ব্যাপার নিয়েই তখন শিশু খুব দ্রুত বিভিন্ন দিক থেকে ভাবতে শিখে। এটি একটি প্রয়োজনীয় জীবন দক্ষতা যা শিশু নানাভাবে চর্চা করতে পারে। আমাদের আচরণ, গল্প বা খেলার বিষয়বস্তুতে শিশু ভিন্নভাবে ভাবতে উৎসাহিত হয় এবং প্রয়োজনীয় সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে থাকে।
|
জটিল কোন বিষয় বোঝার জন্য আমাদেরকে বিষয়বস্তুর সঙ্গে মানসিক সংযোগ স্থাপন করতে হয়, বিষয়ের গভীরে যেতে হয়। প্রথম দিকে শিশু হাতের কাছে যা পায় তাই মুখে নিয়ে যাচাই করে। তারপর যখন কথা বলতে শিখে তখন হাজারো প্রশ্নের মধ্য দিয়ে তার চারপাশে ঘটে চলা বিষয় বা বিভিন্ন বস্তু সন্মন্ধে জানতে চায়। প্রশ্ন এবং কৌতুহলের মাধ্যমে সদ্যপরিচিত এই পৃথিবীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। নতুন ধারনার সঙ্গে আমরা যখন খুব দ্রুত সংযোগ স্থাপন করতে পারি তখন সহজেই ধারনাটা আত্মস্থ করতে পারি। এভাবেই আমাদের মস্তিষ্কের তথ্য ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়।
|
পরীক্ষার ফলাফলই শেষ কথা নয় এটা আমরা এতদিনে জেনে গেছি। ফলাফল কেন্দ্রিক শিক্ষা নয় বরং ক্রমাগত চেষ্টা করে যাওয়া এবং নতুন চ্যালেঞ্জে হাল ছেড়ে না দেওয়ার শিক্ষাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। খেলার মাধ্যমে শিশু প্রতিদিনকার ছোট ছোট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং এর সমাধানের চেষ্টা করে যাওয়ার অভ্যাস রপ্ত করতে পারে। কোন সমস্যার পেছনে লেগে থাকলে যেকোন চ্যালেঞ্জই মোকাবেলা করা যায়। অবিরত পরিশ্রম করে ফল পাওয়ার যে আনন্দ তা শিশুকে উপলব্ধি করাতে হবে। তাকে সুনির্দিস্ট লক্ষ্যে দৃষ্টি রাখার পাশাপাশি নিত্যনতুন সমস্যাকে নিয়ে কাজ করায় আগ্রহী হতে হবে।
|
শিশু কীভাবে শিখে-
দেখা
শিশু তার চারপাশকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করে। আমরা কীভাবে কী করি তাই শিশুকে সব চেয়ে বেশী আকর্ষন করে। সে আমাদের মতো হয়ে উঠতে চায়। |
কথোপকথন
খাবার, গাছ বা পিঁপড়া আমরা যা নিয়েই শিশুর সঙ্গে আলোচনা করি না কেন কথোপকথনে শিশুর মনে নতুন নতুন প্রশ্ন জেগে উঠে, শিশু শেখার প্রতি আগ্রহী হয়। |
অনুসরণ
আমরা যখন শিশুর বলা কথা, গান, খেলা বা তার কর্মকান্ড অনুসরণ করি শিশু তখন উজ্জীবিত হয়। আমাদের অনুসরণে শিশু তার কাজের যথার্থতা খুজে পায়, সে নতুন কিছু করতে চায়। |
অংশগ্রহণ
কোন কিছুতে অংশগ্রহণ শিশুকে আনন্দিত করে। হতে পারে তা নাচ, বই পড়া বা রান্না। শিশু অংশগ্রহণ থেকে সহজেই শিখে। |
শিশু ঠিক মতো বেড়ে উঠছে তো-
|
মনে রাখা ভালো-
|