বলা হয়ে থাকে শিশুর প্রতিটি আচরণই একটি কমিউনিকেশন। শিশু আসলে তার আচরণের মধ্য দিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। তাই ভালোমন্দ যাই হোক শিশুর প্রতিটি আচরণের পিছনে থাকে তার সুনির্দিষ্ট অনুভূতি। সে যা করে তা তার বোধশক্তির বহিঃপ্রকাশ। শিশুর আত্মনিয়ন্ত্রণ কম থাকায় সে বুঝতে পারে না কোন অনুভূতি কীভাবে প্রকাশ করতে হয়।
তাই শিশুর যে কোন কর্মকান্ডের প্রতিক্রিয়ায় তিনটি বিষয়ে ভাবুন-
ওর এখন কী অনুভূতি হচ্ছে? ধরা যাক আজ আমাদের তিন বছরের বাবুইসোনা হঠাৎ করে খুব বিরক্ত করছে। কিছুই শুনছে না, বা কোন কিছুতেই তাকে শান্ত করা যাচ্ছে না। অন্যদিনের তুলনায় আজ সে বেশ চঞ্চল।দু একবার কঠিন করে বললেও সে ঠিকই দুস্টমি করছে, একদমই ভালো আচরণ করছে না। এই রকম একটা পরিস্থিতিতে প্রথমেই ভাবুন ওর এখনকার অনুভূতি কী! ওর মন কী বিক্ষিপ্ত? সে যেহেতু কয়েকবার ছোটখাটো বিষয়েও কেঁদে ফেলছে তার মানে সে নিজেও দ্রুত বিরক্ত হচ্ছে, কোন কিছুই তার মনকে শান্ত করছে না। তারমানে বাবুইর মন কিছুটা উত্তেজিত, বিক্ষিপ্ত, বুঝতে পারছে না কী করলে সে নিজেকে খুশি করতে পারবে। কোন একটা কারণে তার মন অন্যদিনের তুলনায় ভীষণ অশান্ত। কেন এরকম আচরণ করছে? আমরা সবাই জানি মন সম্পর্কে শিশুর ধারনা একেবারেই কম থাকে। খুব কম শিশুই বুঝতে পারে কোন পরিস্থিতিতে তার মন বিক্ষিপ্ত বা দুশ্চিন্তা করবে। সে যে উত্তেজিত অবস্থায় আছে এটা তার পক্ষে বোঝা সম্ভব হয় না। সে উত্তেজনার বশে অনেক কিছু করছে, এক ধরনের বাধন হারা অবস্থায় থাকে। নানা রকম কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে সে নিজেকে খুশী করতে চাইছে কিন্তু একটু পর কোন কিছুই তার ভালো লাগছে না। মানসিক চাপের কারণে সে দ্রুত বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে, আর কারো উপদেশ শুনতে চাইছে না। চাপ থেকে শিশু যা করে আমরা হয়তো বাইরের আচরণটাই দেখি কিন্তু কিভাবে সে চাপটা অনুভূত হচ্ছে সেটা বুঝি না। আপনি যে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, তা থেকে শিশু ঠিক কী শিখবে? এখন আমাদের ভাবতে হবে যে, এ রকম একটা পরিস্থিতিতে আমরা যেই আচরণটা শিশুর সঙ্গে করবো তা শিশুকে ঠিক কিভাবে সাহায্য করবে? সে কী কিছু শিখতে পারবে? সে কী বুঝতে পারবে পরবর্তীতে ঠিক এই কাজটি করলে সে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবে? অথবা এমন কিছু যা তাকে কিছুটা স্থিতিশীল করবে, মনকে শান্ত করবে। এই অংশটা নির্ভর করে শিশুর ব্যক্তিত্বের উপর। যেহেতু প্রতিটি শিশু আলাদা, তাই তাদের শান্ত হওয়ার ধরনও অন্যদের মতো হবে এটা ভাবা ঠিক না। বাবুইর মা-বাবা বা কেয়ারগিভারই ভালো বুঝতে পারে ঠিক কী ধরনের কর্মকান্ডে সে নিজেকে শান্ত করতে পারবে, এবং সেই পদ্ধতিটি ভবিষ্যতেও প্রয়োজনে ব্যবহার করবে।একটা ভালো উপায় হচ্ছে যে কারনে তার মন উত্তেজিত সেই কারণটা এড়ানো বা নিবারণ করতে পারা। তবে সমস্যা হচ্ছে যে আমরা বেশিরভাগ সময়ই ঠিক কী কারণে মনটা অশান্ত সেটা নিয়ে ভাবতে চাই না, আমরা দেখি একটা উত্তেজিত মন কী করছে সেটা।এটা একধরনের ভুল চর্চাই বলা যায়। এখানে বলে রাখা ভালো কিছু সাধারণ কারণ আছে যা কম বেশী সব শিশুর মনকে খুব দ্রুত উত্তেজিত করে ফেলে এবং তার আচরণে হঠাৎ একটা পরিবর্তনও দেখা যায়। এরকম কয়েকটি কারণ নিচে তুলে ধরছি-
দুপুরে ঘুমাতে না চাওয়াঃ (কী অনুভূতি) জেগে থাকা অবস্থায় সে যে আনন্দটা করছে সেটা হারাতে না চাওয়া, তার কাছে ঘুমানো মানে কোন কিছু থেকে ছুটি নেওয়া। (কেন এই আচরণ) শিশু ভাবছে আমরা কৌশলে বা জোর করে তাকে জেগে থাকার আনন্দ থেকে দুরে সরাচ্ছি। তাই সে নিজের মতো করে প্রতিবাদ করে, বড়দেরকে নানাভাবে অসহযোগিতা করে। (কী শিখছে) যখন আমরা রাগারাগি বা জোর করে তাকে ঘুম পারাতে চাই তাহলে কিন্তু তার অনুভূতিতে কোন ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে না। শিশু যেই ভুল ভাবনায় ছিল তাতেই থেকে যায়। #BabuiTip
1 Comment
|
অন্যান্য BabuiTipশিশুর সঙ্গে ঘরের কাজ নতুন BabuiTipআরও পড়ুন- |